‘সরকার খালেদা জিয়াকে দুনিয়া থেকে বিদায়ের চক্রান্তে লিপ্ত’

No comments

ঈদের আগেই বিএনপি চেয়ারপারসম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, দেশনেত্রীর জীবন বিপন্ন করার গভীর ষড়যন্ত্রে মেতেছে সরকার।

তিনি বলেন, এক অমানবিক প্রতিহিংসার শিকার বেগম জিয়া এখন গুরুতর অসুস্থতা নিয়ে বিধ্বস্ত। অবাসযোগ্য একটি কক্ষের মধ্যে বন্দী। সরকার তাকে দুনিয়া থেকে বিদায় করার ষড়যন্ত্র করছে। তিনি চিকিৎসাবঞ্চিত, তার মানবাধিকার লঙ্ঘিত, বেঁচে থাকার অধিকার অপহৃত।

সোমবার বিকালে নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, দেশনেত্রী গত ৫ জুন ‘ট্রানজিয়েন্ট স্কীমিক অ্যাটাক’ (টিআইএ) এ ৫/৬ মিনিট অজ্ঞান হয়ে পড়েছিলেন।

অথচ দুই দিন পর বেগম জিয়ার নিকটাত্মীয়রা তার সঙ্গে দেখা করে আসার পর ঘটনা আমাদেরকে অবহিত করার পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত কারা কর্তৃপক্ষ নিরব-নিশ্চুপ থেকেছে।

রিজভী বলেন, আমরা গণমাধ্যমে এ বিষয়ে সোচ্চার হওয়ার পর কারা কর্তৃপক্ষ ঘটনাটি জানে না বলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন। তাহলে কী দেশনেত্রীর জীবন ও নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ঠেলে দিতেই কারা কর্তৃপক্ষ বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছে?

তাহলে বুঝা যায় খালেদা জিয়াকে যে বন্দি করে রাখা হয়েছে তা আইনি প্রক্রিয়ায় নয় বরং প্রতিহিংসার প্রক্রিয়া। তাকে তিলে তিলে ধ্বংস করার জন্যই এই প্রতিহিংসার প্রক্রিয়া।

রিজভী বলেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকও বলেছিলেন যে, বেগম জিয়ার সুগার লেভেল কমে গিয়েছিল। যদি তার কথাই ঠিক হয় তাহলে তো সুগার লেভেল কমে যাওয়াও তো বিপজ্জনক। কিন্তু বাস্তবে উনি টিআইএ-তে আক্রান্ত হয়ে জ্ঞান হারিয়েছিলেন যা তার ব্যক্তিগত চিকিৎসকরা অবহিত করেছেন।

তিনি বলেন, চিকিৎসকরা বেগম জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষাসহ তাৎক্ষণিক ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তির সুপারিশ করেছিলেন। দেশনেত্রীর জ্ঞান হারানোর মতো এতবড় একটি দুঃসংবাদের পরেও কারা কর্তৃপক্ষ তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়া তো দূরের কথা, বরং দিনের পর দিন সময়ক্ষেপণ করে দেশনেত্রীর অসুস্থতাকে আশঙ্কাজনক মাত্রায় নিয়ে যেতে চাচ্ছে।

বিএনপি মুখপাত্র বলেন, খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসকরা তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে এসে বলেছিলেন- তাৎক্ষণিক চিকিৎসা না দিয়ে তার শারীরিক পরিস্থিতি ভয়ঙ্কর খারাপের যেতে পারে।

তিনি বলেন, গুরুতর অসুস্থ খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে যে তাচ্ছিল্য ও অবহেলা চলছে তাতে গভীর আশঙ্কা হয়- সরকার বেগম জিয়াকে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দেয়ার মহাচক্রান্তে লিপ্ত।

রিজভী বলেন, ইউনাইটেড হাসপাতালে উন্নতমানের চিকিৎসার দাবি উপেক্ষা করে সরকার তাকে পিজি হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়ার কথা বলে চলেছে। সেখানে তো সব দলবাজ চিকিৎসক। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদেরকে তো আগেই সেখান থেকে চাকরিচ্যুত করে বিদায় দিয়ে দেয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের দলবাজ চিকিৎসকদের দ্বারা বেগম জিয়ার যথাযথ চিকিৎসা হবে না। কেননা তাদের ওপর বেগম জিয়া এবং দেশের মানুষের কোনো আস্থা নেই।

রিজভী বলেন, তারপরও সরকার জবরদস্তিমূলকভাবে বেগম জিয়াকে পিজি হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়ার কথা বলা দূরভিসন্ধিমূলক, সুপরিকল্পিত চক্রান্ত। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া পিজি হাসপাতালে চিকিৎসা নিরাপদ মনে করেন না বলেই তিনি সেখানে চিকিৎসা নিতে চাচ্ছেন না।
কর্মসূচি

এদিকে ঈদুল ফিতরের আগেই বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি ও সুচিকিৎসার দাবিতে বৃহস্পতিবার সারাদেশে জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করবে জেলা বিএনপি।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা নজমুল হক নান্নু, কেন্দ্রীয় নেতা মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, তাইফুল ইসলাম টিপু, বেলাল আহমেদ, আসাদুল করিম শাহীন প্রমুখ।

No comments :

Post a Comment